প্রচ্ছদ

গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় ঘুষ-বাণিজ্য অপেন সিকরেট

১৬ জানুয়ারি ২০১৬, ০০:২৩

ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার

sylhetersokalসিলেটের গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় ঘুষ বাণিজ্য, আটক আসামিদের জামাই’র আদর করে রাখা, মামলা তদন্ত করতে মোটা অংকের উৎকোচ দাবি, রহস্যজনক কারণে আটক আসামিদের বিলম্বে কোটে প্রেরণ করা, মামলার রুজুকৃত আসামিদের আটক করতে মোটা অংকের চাঁদা দাবি, বৃত্তবানদের আটকের পর থানা হেফাজতখানায় না রেখে বিশেষ ব্যবস্থায় রাখার ব্যবস্থা আছে।

সব মিলিয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা হ-য-ব-র-ল অবস্থায় পরিনত হয়েছে। থানায় এসে ভূক্তভোগীরা সেবা পাচ্ছেন না।

বিশেষ করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মোঃ জহিরুল হক গোলাপগঞ্জে যোগদানের পর থেকেই ঘুষ বাণিজ্য অপেন সিকরেটে পরিণত হয়েছে। তিনি যোগদানের পর থেকে গোলাপগঞ্জ থানার অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে জনসম্মুখে ঘুষ বাণিজ্য আদায় করছেন। তিনি কাউকে পরোয়া করছেন না বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

পাশাপাশি বাদি বিবাদির কাছ থেকে ভয়-ভিতি ও লোভ দেখিয়ে মোটা অংকের উৎকোচ আদায় করছেন তিনি। একই সাথে তিনি গোলাপগঞ্জে যোগদানের পর থেকে দালালদের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। মডেল থানায় দালালদের উৎপাত বৃদ্ধি পাওয়ায় ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন থানায় আসা আগত ভূক্তভোগীরা। দালালদের খপ্পরে পড়ে সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে পড়ছেন ভূক্তভোগী সাধারণ জনগন।

ওসি (তদন্ত) মোঃ জহিরুল হক গোলাপগঞ্জে যোগদানের পর থেকে চিহ্নিত দালালদের উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ওসির কার্যালয়ে দালালদের আনাগুণা লক্ষণীয়। প্রতিনিয়ত দালালরা তার রুমে ঘুর ঘুর করতে দেখা যায়। থানায় আসা একাধিক আগত ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন গোপনে যে কেহ থানায় এসে তদন্ত করলে ওই ওসি (তদন্ত) জহিরুল হকের রমরমা অনৈতিক ঘুষ বাণিজ্যের প্রমান পাওয়া যাবে।

গত সোমবার উপজেলার রণকেলী দক্ষিনভাগ গ্রামের জনৈক্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে আটক করা হয়। রাত ১০ ঘটিকার পর অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) রহস্যজনক কারণে তাকে থানা হেফাজতখানা থেকে বাহির করে এনে জামাইর আদরে একটি রুমে রাত্রি যাপন করিয়ে পরদিন সকালে বিশেষ ব্যবস্থায় হ্যান্ডকাফ না পরিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন।

এদিকে উপজেলার উত্তর ধারাবহর গ্রামের সরফ উদ্দিন অভিযোগ করেছেন তাহার বসত বাড়ির শত বছরের পুরাতন রাস্তাটি প্রতিপক্ষ পাকা দেয়াল দিয়ে বন্ধ করার চেষ্টা করলে তিনি গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে সেটি জিডি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ওই জিডি তদন্তকালীন সময়ে প্রতিপক্ষ পুনরায় রাস্তা বন্ধ করার পায়তারা করলে সরফ উদ্দিন গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় এসে জানালে ওসি জহির তাহার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে সরফ উদ্দিনের স্বাক্ষরিত নতুন একটি আবেদন গ্রহণ করে পরের দিন তিনি নিজেই অফিসার ইনচার্জ (প্রশাসন) কে না বলেই ঘটনা স্থলে গিয়ে রাস্তার সুরাহা করার জন্য রাস্তাটি চিহ্নিত করে সীমানা নির্ধারণ করে দিয়ে আসেন।

পরে তিনি থানায় আসতে না আসতে প্রতিপক্ষ ফের রাস্তার সীমানার খুঁটি গুলি ফেলে দেয়। এনিয়ে সরফ উদ্দিন গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় প্রতিকারের জন্য প্রায় অর্ধমাস ঘুরেও কোন প্রতিকার পাননি। পরে সরফ উদ্দিন তাহার আবেদনের কপিটি ফেরত চাইলে সেটি তিনি না দিয়ে তাকে জানান আবেদনের কপিটি ছিড়ে ফেলছেন।

সরফ উদ্দিন অসহায় হয়ে রাস্তাটির প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার মামলা নং-৫ এর বাদি সরাসরি ওসি তদন্তকে জানান মামলাটির তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই ফরিদ মিয়া কিংবা এসআই খন্দকার আতিকুর রহমানকে প্রদান করার জন্য অনুরোধ করেন, তিনি ওই অনুরোধ না রেখে নিজেই তদন্ত করবেন বলে মামলাটি নিজ নামে রেখে দেন।

পরদিন রাতে মামলার আসামির অপর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই জাফরকে নিয়ে আসামি ধরতে গেলে রহস্যজনক কারণে আসামীদের ঘরের মধ্যে পেয়েও আটক করেননি। পর দিন দিনের বেলা তিনি মামলা তদন্ত করতে যাচ্ছেন বলে অনুরূপ ভাবে এসআই জাফরকে নিয়ে আসামিদের বাড়িতে যান এবং আসামিদের বাড়িতে চা-নাস্তা করে প্রকাশ্যে উৎকোচ নিয়ে চলে আসেন। অথচ মামলার বাদি জানেন না তিনি মামলা তদন্ত করতে আসছেন কিংবা বাদিকে তিনি জানাননি।

পরে সিলেট পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওই আলোচিত ওসি তদন্ত জহিরুল হককে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা থেকে বাদ দিয়ে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা প্রদান করা হয় এসআই শাহিনকে।

ওসি তদন্ত জহিরুল হক গোলাপগঞ্জ থানায় যোগদানের পর থেকে এভাবে ওপেন ঘুষ বানিজ্যে লিপ্ত হয়ে পড়ছেন। কাউকে তিনি পরোয়া করছেননা বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি টাকা ছাড়া কাহারো সাথে কথা বলতে নারাজ। তাহার নেতৃত্বে গোলাপগঞ্জ থানায় বিশাল দালাল সিন্ডিকেট গড়ে উঠার অভিযোগ রয়েছে।

একাধিক ভূক্তভোগী অভিযোগ করেছেন তিনি এতই নির্লজ্য একজন পুলিশ কনস্টেবলের চেয়ে নিম্নমুখী তাহার রুচি রয়েছে। তিনি গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় যোগদানের পর থেকে অতিথের সকল রের্কড ভঙ্গ করে ঘুষ বাণিজ্যে লিপ্ত রয়েছেন যাহা একজন পুলিশ অফিসার হিসেবে বেমানান সই বলে সচেতন মহল থেকে জানা যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত হতে ওসি (তদন্ত) জহিরুল হকের মোবাইল ফোনে একাধিক বার যোগযোগ করলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যপারে অফিসার ইনচার্জ (প্রশাসন) এ কে এম ফজলুল হক শিবলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান এ বিষয়ে তিনি কিছুই মন্তব্য করতে পারছেন না। তিনি অসহায়।

সংবাদটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন
0Shares

সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম

ফেসবুকে ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার