ইতালি পাঠানোর কথা বলে শতাধিক মানুষকে পথে বসিয়েছেন বিয়ানীবাজারের দেলোয়ার
০৯ জুলাই ২০২৫, ২০:০৫

ইউরোপের দেশ ইতালিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় পাঠানোর কথা বলে শতাধিক মানুষকে পথে বসিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তার এই প্রতারণার সাথে জড়িত অপর দুই ভাই কাওসার হোসেন ও তারেক হোসেন। তারা সকলেই বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের জলঢুপ পাহাড়িয়াবহর এলাকার শফায়ত আলীর পুত্র।
স্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তিতে ৬ মাসের সময় দিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ওই চক্র হাতিয়ে নিয়েছে ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা করে। প্রায় ১৫০ জন লোক তার সাথে ইতালি যাওয়ার চুক্তি করে প্রতারিত হয়েছেন। ভুক্তভোগীদের কয়েকজন বুধবার বাংলাদেশ মাল্টিমিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (বিএমজেএ) সিলেট বিভাগীয় কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তাদের এমন দুর্দশার কথা তুলে ধরেন।
ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই গ্রামের জামিল আহমদ বলেন, উন্নত জীবনের আশায়, পরিবার ও দেশের জন্য রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে বৈধভাবে ইউরোপের দেশ ইতালিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যাওয়ার উদ্দ্যশ্যে ২০২৩ সালের জলঢুপ পাহাড়িয়াবহরের দেলোয়ার হোসেনের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। দেলোয়ার তার ভাই কাওছার হোসেন সেখানে আছেন এবং ইতালিতে তাদের নিজস্ব কোম্পানী রয়েছে বলেও তাদের লোভ দেখিয়েছেন। চুক্তিপত্রে ছয় মাসের মধ্যে ভিসা না হলে টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও টাকা ফেরত না দিয়ে দেলোয়ারসহ তার দুই ভাই কাওসার ও তারেক কালক্ষেপন শুরু করেন। এমনকি টাকা না দেয়ার জন্য তারা রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে। বিয়ানীবাজার আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে অনেককে হুমকি প্রদান করে। যার কারণে অনেকে প্রতিবাদের অবস্থান থেকে সরে আসে। তবে পরবর্তীতে তারা সকলে মিলে তার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর তাদেরকে আওয়ামী লীগের দোসর সাজিয়ে বিভিন্ন মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, ইতালি যেতে অনেকেই সরল বিশ্বাসে পরিবারের সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে দেলোয়ারকে টাকা দিয়েছেন। দীর্ঘ দিন থেকে টাকা পয়সা হারিয়ে তারা এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সেই সাথে পরিবার ও সমাজের কাছে নিন্দিত হচ্ছেন। অনেক ভুক্তভোগী মধ্যপ্রাচ্য ছিলেন যাদের মাসিক আয় ছিলো ৫০ থেকে ১ লক্ষ টাকা। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের কয়েকজন লাউতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া অনেকে টাকা ফেরত পেতে ব্যক্তিগতভাবে বিয়ানীবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তবুও কোনো সুরাহা হয়নি। বিগত সরকারের পতনের পর থেকে দেলোয়ার হোসেন লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তার বাড়িতে গিয়েও পরিবার বা তার বাবার কাছ থেকে ন্যূনতম শান্তনা পাননি বলে অভিযোগ করেন। অথচ বিয়ানীবাজার, সিলেটসহ বিভিন্ন জায়গায় কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন েেদেলায়ার ও তার ভাইয়েরা। পাওনা টাকা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিয়ানীবাজারের চারখাই গ্রামের মুরাদ আহমদ, পূর্ব দেবারাই গ্রামের মামুনুর রশীদ, শ্রীধরা গ্রামের তানিম মাহমুদ, গোলাপগঞ্জের সাহেল আহমদ, বিয়ানীবাজারের সামাদ আহমদ, বড়লেখার আব্দুস শহীদ, খালেদ আহমদ ও সুজিত চন্দ্র ঘোষ এবং জকিগঞ্জের আব্দুল হাকিম। প্রেস বিজ্ঞপ্তি