এবার লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে অভিযান, ৪টি ক্রাশার মেশিন ধ্বংস
১১ জুলাই ২০২৫, ০২:১৬

বৃহস্পতিবার লোভছড়ায় পাথর ভাঙার কলের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় প্রশাসন।
বিভিন্ন মহলের আপত্তি, প্রতিবাদ সত্ত্বেও অবৈধ পাথর ভাঙার কলের (স্টোন ক্রাশার মেশিন) বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার সিলেটের কানাইঘাট লোভাছড়া পাথর কোয়ারি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪টি ক্রাশার মেশিনের যন্ত্রপাতি ধ্বংস করা হয়েছে।
এরআগে গত প্রায় একমাসে সিলেটের গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ ও সদর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও কয়েকটি মেশিন ধ্বংস করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার।
অভিযানে মুলাগুল এলাকায় বন্ধ থাকা ৪টি ক্রাশার মেশিনের যন্ত্রপাতি ধ্বংস করা হয়। এছাড়া কোয়ারীর নিলামকৃত ৪৫ লক্ষ ঘনফুট পাথরের নিলামকারী প্রতিষ্ঠান পিয়াস এন্টারপ্রাইজের লোকজনদের সাথে কথা বলে নিলামের শর্ত অনুযায়ী পাথর পরিবহন করার জন্য নির্দেশনা দেন নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার।
নিলামের বাহিরে পাথর পরিবহন ও পাচার করা হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। এছাড়া নিলামকৃত পাথর ছাড়া কোয়ারী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধসহ কোয়ারী এলাকায় অবৈধভাবে ক্রাশার মেশিন দিয়ে পাথর ভাঙা বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
এরআগে ১৪ জুন প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) জাফলং পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ সময় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংসহ সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি ভবিষ্যতে ইজারা দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে অবৈধ পাথরের ব্যবসা ঠেকাতে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান দ্রুততার সঙ্গে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে থাকা পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। দুই উপদেষ্টার নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই ১৬ জুন থেকে পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোয়ারি থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধে নির্দেশনা দেয় সরকার। এর পর থেকে রাতের আঁধারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলন চলত। গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর কোয়ারির নিয়ন্ত্রণ নেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় হাজারো শ্রমিক পাথর উত্তোলন শুরু করেন। এসব পাথর বিক্রি করা হয় পাথর ভাঙার যন্ত্রের মালিকদের কাছে। পরে সেসব পাথর মেশিনে ভেঙে ছোট করে ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করা হয়।